বিশেষ ক্ষমতা আইন

Photo by Pixabay on Pexels.com

বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কিছু কার্যকলাপ প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে ১৯৭৪ সালে এই আইনটি প্রণীত হয়।

বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর ১৫ ধারায় অন্তর্ঘাতী কার্য (Sabotage)’র শাস্তির বিধান উল্লেখ করা হয়েছে। এই আইনের ১৫ ধারায় বলা হচ্ছে, কোন ব্যক্তি কর্মক্ষমতা দুর্বল করা, কার্যকারিতা ব্যাহত করা কিংবা ক্ষতিসাধন করার উদ্দেশ্যে এমন কোন কাজ করবেন না; যেমন :

  • কোন ভবন, যানবাহন, যন্ত্রপাতি বা অন্য কোন সম্পত্তি যা সরকার বা কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাজে ব্যবহৃত হয়;
  • কোন রেলপথ, শূন্যে ঝুলন্ত রজ্জুপথ, রাস্তা, খাল, সেতু, কালভার্ট, বিমান বন্দর ইত্যাদি;
  • কোন রেলওয়ে বা নৌযান বা বিমান পোতের রোলিং স্টক;
  • কোন ময়লাবাহী নর্দমার কার্য, খনি বা কারখানা;
  • কোন পাট, পাটজাত দ্রব্য, পাটের গুদাম, পাটকল কিংবা পাটের গাঁইট বাঁধার কল ইত্যাদি।

কোন ব্যক্তি যদি ১৫ ধারার অধীন অন্তর্ঘাতী কাজ করে বা উক্ত ধারার বিধান লংঘন করে তাহলে সে ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড অথবা চৌদ্দ বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

এই আইনের ধারা ১৯ এ ধংসাত্মক সংঘসমূহের নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। ১৯ ধারায় বলা হয়েছে, যেক্ষেত্রে সরকার এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কোন সংঘ এমন পন্থায় কাজ করতে পারে বা ব্যবহৃত হতে পারে যা জনশৃঙ্খলার জন্য ক্ষতিকর বলে আশংকা করা যায় সেক্ষেত্রে সংঘটির নিয়ন্ত্রণের অধিকার ১৯ ধারার বিধান অনুসারে সরকারের রয়েছে।

উক্ত আইনের ২০ ধারা অনুসারে, কোন ব্যক্তি যদি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা লক্ষ্য হাসিলের জন্য ধর্ম ভিত্তিক বা ধর্মের নামে গঠিত কোন সাম্প্রদায়িক বা অন্য সংঘ বা ইউনিয়ন গঠন করেন বা উক্ত সংঘের সদস্য হন বা তৎপরতায় অংশগ্রহণ করেন, তবে তিনি তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে বা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

সান্ধ্য আইন (Curfew) এর বিধান রয়েছে এই আইনের ২৪ ধারায়। এই আইনের ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা পুলিশ কমিশনার আদেশ জারীর মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তির লিখিত অনুমতি ছাড়া কোন ব্যক্তি ঘরের বাইরে আসতে পারবেন না মর্মে নির্দেশ দিতে পারবেন। কোন ব্যক্তি এই ধারার প্রদত্ত নির্দেশ লংঘন করলে তিনি ১ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

মজুতদারী বা কালোবাজারী কারবারের শাস্তি :
এই আইনের ২৫ ধারায় বলা আছে, কোন ব্যক্তি মজুতদারী অথবা কালো বাজারের কারবারের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে তিনি মৃত্যুদণ্ডে অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা ১৪ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

নোট এবং সরকারি স্ট্যাম্প জাল করার জন্য দণ্ড :
এই আইনের ২৫ক ধারায় বলা আছে, কোন টাকার নোট এবং সরকারি স্ট্যাম্প জাল করলে বা জ্ঞাতসারে এইরূপ জাল করার প্রক্রিয়ার কোন অংশ সম্পন্ন করলে; অথবা টাকার নোট বা সরকারি স্ট্যাম্প জাল বলে জানা সত্ত্বেও তা খাঁটি বলে বিক্রয় করলে বা ক্রয় করলে বা অন্য কোনভাবে ব্যবসা বাণিজ্য করলে; অথবা জাল নোট এবং সরকারি স্ট্যাম্প তৈরির কাজে ব্যবহৃত কোন যন্ত্রপাতি তৈরি করলে এবং প্রস্তুত প্রণালীর কোন অংশ সম্পন্ন করলে, বিক্রয় বা বিলি বণ্টন করলে ঐ ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা চৌদ্দ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

চোরা চালানের জন্য দণ্ড :
এই আইনের ২৫খ ধারায় বলা আছে, কোন ব্যক্তি আইনানুসারে আরোপযোগ্য বহিঃশুল্ক বা কর প্রদান কৌশলে এড়িয়ে পাট, স্বর্ণ বা রৌপ্যের বাট, স্বর্ণ বা রৌপ্য মিশ্রিত দ্রব্য, মুদ্রা, খাদ্যদ্রব্য ও ঔষধ, আমদানীকৃত পণ্যদ্রব্য কিংবা অন্য কোন পণ্য দ্রব্য বাংলাদেশের বাইরে নিয়ে যায় বা বাংলাদেশের ভিতরে কোন পণ্য দ্রব্য আনয়ন করে; সে মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা চৌদ্দ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন

খাদ্য, পানীয়, ঔষধ অথবা প্রসাধনী দ্রব্যে ভেজাল দেওয়া :
এই আইনের ২৫গ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যে বা পানীয় দ্রব্যে ভেজাল দিয়ে তা খাওয়া বা পান করার অযোগ্য করেন এবং তা খাদ্য বা পানীয় হিসেবে বিক্রি করতে চান কিংবা বিক্রি করেন বা বিক্রির জন্য প্রদর্শন করেন তবে উক্ত ব্যক্তি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে বা চৌদ্দ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আবার এই আইনের ২৫গ ধারায় আরও বলা আছে, কোন ব্যক্তি প্রসাধনীতে ভেজাল মেশান কিংবা ভেজাল মিশিয়ে উক্ত দ্রব্য বিক্রি করেন বা বিক্রির জন্য উপস্থাপন করেন বা বিক্রি করতে চান তবে ঐ ব্যক্তি ৫ বছর পর্যন্ত যে কোন মেয়াদের সশ্রম কারাদণ্ডে এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এই আইনের অধীন অপরাধসমূহ জামিন অযোগ্য হবে।

~ রাসেল বিশ্বাস
অ্যাডভোকেট,
জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চট্টগ্রাম।
মোবাইল : ০১৭৪৬-০২২৫৫০


Discover more from Adv R. Biswas' Law Blog - Legal Articles, Advice & Opinions

Subscribe to get the latest posts to your email.

One Comment Add yours

  1. morshed99 says:

    Dear Sir,

    Thank you for simplifying the complicated legal language into something comprehensible for people like me. Regards with best wishes.

    Morshed from Dhanmondi, Dhaka

    Liked by 1 person

Leave a comment