আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ আইনে অপরাধ ও শাস্তি

বাংলাদেশে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী কতিপয় অপরাধের দ্রুত বিচারের উদ্দেশ্যে বিশেষ বিধান প্রণয়নকল্পে ২০০২ সালে আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২ পাস করা হয়৷২০১৯ এর সংশোধনী অনুসারে, এই আইন কার্যকর হওয়ার তারিখ থেকে বাইশ বৎসর বলবৎ থাকবে। অত্র আইনের সংজ্ঞানুসারে, “আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ” অর্থ-(অ) কোন প্রকার ভয়-ভীতি প্রদর্শন করিয়া বা বেআইনী বল প্রয়োগ করিয়া-(১) কোন ব্যক্তি,…

পারিবারিক সহিংসতা আইনে মামলা

বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ, ১৯৭৯ ও শিশু অধিকার সনদ, ১৯৮৯ এর স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসাবে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত নারী ও শিশুর সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ, পারিবারিক সহিংসতা থেকে নারী ও শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ নামে একটি…

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন

নারী ও শিশু নির্যাতনমূলক অপরাধসমূহ কঠোরভাবে দমনের উদ্দেশ্যে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সর্বশেষ সংশোধনী, ২০২০) নামে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৭ ধারায় নারী ও শিশু অপহরণের শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। দণ্ডবিধিতে অপহরণের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, “যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে কোন স্থান হইতে গমন…

বিবাহ বিচ্ছেদ মামলায় ডিক্রীর কারণসমূহ (Dissolution Of Muslim Marriages)

মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইন, ১৯৩৯ আইনের ২ ধারা অনুসারে, বিবাহিত কোন মহিলা নিম্নোক্ত এক বা একাধিক কারণে বিবাহ বিচ্ছেদের ডিক্রী পাওয়ার অধিকারী হবেন। যথা :- ১) চার বছর কাল যাবৎ স্বামীর কোন খোঁজ খবর জানা না গেলে,২) দুই বছর কাল যাবৎ স্বামী কর্তৃক অবহেলিত এবং স্বামী তাঁকে ভরণপোষণ দিতে ব্যর্থ হলে,৩) মুসলিম পারিবারিক আইন লংঘন…

পারিবারিক আদালত আইন, ২০২৩ এর ৫ ধারা; ও বিবাহ বিচ্ছেদ, ভরণপোষণ, দেনমোহর, অভিভাবকত্ব ইত্যাদি

বাংলাদেশ সরকার ২০২৩ সালে পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ বাতিল করে পারিবারিক আদালত আইন, ২০২৩ পাস করেন। পারিবারিক আদালত আইন, ২০২৩ এর ধারা-৫ অনুসারে, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশে বর্ণিত বিধানাবলি সাপেক্ষে, পারিবারিক আদালতে নিম্নরূপ সকল বা যেকোনো বিষয় সম্পর্কিত বা তা থেকে উদ্ভূত যেকোনো মোকদ্দমা গ্রহণ, বিচার এবং নিষ্পত্তির নিরঙ্কুশ এখতিয়ার বিজ্ঞ পারিবারিক আদালতের…

মুসলিম পারিবারিক আইনে তালাক কি?

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৭(১) ধারার বিধান মোতাবেক কোন ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিতে চাইলে যে কোন প্রকারে তালাক উচ্চারণের পর পরই তালাক প্রদান সংক্রান্ত লিখিত নোটিশ তথা তালাক নোটিশ তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীর নিকট এবং পাশাপাশি তালাক নোটিশের একটি অনুলিপি চেয়ারম্যানের বরাবর প্রেরণ করবেন। ৭(১) এর ধারার বিধান অনুসারে পুরুষ তাঁর স্ত্রীকে তালাক নোটিশ…

মুসলিম পারিবারিক আইনে বহু বিবাহ (Polygamy) কি ও এর শাস্তি

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ, ১৯৬১ এর ৬ ধারা মোতাবেক আইনের শর্তানুসারে বহু বিবাহ (Polygamy) একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। উক্ত ধারায় বলা হয়েছে, বিবাহ বিদ্যমান থাকাকালে সালিশী কাউন্সিলের লিখিত পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোন ব্যক্তি অন্য কোন বিবাহে চুক্তিবদ্ধ হতে পারবেন না এবং বিনানুমতিতে অনুষ্ঠিত কোন বিবাহ ১৯৭৪ সনের মুসলিম বিবাহ এবং তালাক রেজিষ্ট্রেশন আইন এর…

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষা (অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষা) প্রস্তুতি – ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ – ১ম পর্ব

ফৌজদারী কার্যবিধির ৯৮ ধারা : চোরাই মাল, জাল দলিল ইত্যাদি আছে বলে সন্দেহ হলে সেই বাড়ি তল্লাশী ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ৯৮ ধারা অনুসারে, কোন চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মহকুমা ম্যাজিষ্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট বা প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট খবর পেয়ে প্রয়োজনীয় অনুসন্ধানের পর যদি এরূপ বিশ্বাস করার কারণ দেখতে পান যে, কোন স্থানে চোরাই মাল জমা রাখা…

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষা (অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষা) প্রস্তুতি – দণ্ডবিধি, ১৮৬০ – ৪র্থ পর্ব

অসাধুভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎকরণ (Dishonest Criminal Misappropriation of Property) দণ্ডবিধির ৪০৩ ধারা অনুসারে, কোন ব্যক্তি যদি অসাধুভাবে কোন অস্থাবর সম্পত্তি আত্মসাৎ করে অথবা উক্ত সম্পত্তি তার নিজের ব্যবহারে প্রয়োগ করে, তবে উক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই বৎসর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা অর্থ দণ্ডে, অথবা উভয়বিধ দণ্ডে দণ্ডিত হবে। অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ (Criminal Breach of…

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষা (অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষা) প্রস্তুতি – দণ্ডবিধি, ১৮৬০ – ৩য় পর্ব

অবৈধ বাধা দণ্ডবিধির ৩৩৯ ধারায় বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তির যে দিকে যাওয়ার অধিকার আছে তাকে সে দিকে যেতে না দেওয়ার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দান করাকে অবৈধ বাধা বলা হয়। শাস্তি : দণ্ডবিধির ৩৪১ ধারা অনুসারে, অবৈধ বাধা প্রদানের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি সর্বোচ্চ এক মাস পর্যন্ত মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে বা উভয়…

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষা (অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষা) প্রস্তুতি – দণ্ডবিধি, ১৮৬০ – ২য় পর্ব

অবহেলার ফলে ঘটিত মৃত্যু অবহেলা বা বেপরোয়া কাজের মাধ্যমে হত্যা করাকে দণ্ডবিধির ২৯৯ ধারা এবং ৩০০ ধারার অধীন নিন্দনীয় নরহত্যা বা খুন হিসেবে শাস্তিযোগ্য করা হয়নি। বরং দণ্ডবিধিতে এটার জন্য পৃথক শাস্তির বিধান করা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৩০৪ক ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোন ব্যক্তি বেপরোয়াভাবে বা অবহেলাজনকভাবে কোন কাজ করে কোন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায় এবং তা…

সাইবার নিরাপত্তা আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারা সমূহ

সাইবার অপরাধ (Cyber Crime) দমন ও প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ বাতিল করে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ নামে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেন। সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর ২১ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয়…

বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষা (অ্যাডভোকেটশীপ পরীক্ষা) প্রস্তুতি – দণ্ডবিধি, ১৮৬০ – ১ম পর্ব

আত্মরক্ষার অধিকার (Right of Private Defence) নিজেকে রক্ষা করার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির রয়েছে। নিজের বা অপরের দেহ ও সম্পত্তি অন্যের বে-আইনী হস্তক্ষেপ বা আক্রমণ হতে রক্ষা করার অধিকারকে আত্মরক্ষার অধিকার (Right of Private Defence) বলা হয়। তবে আইনে উল্লেখিত শর্তসাপেক্ষে এই অধিকার প্রয়োগ করা যায়। দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ ধারায় আত্মরক্ষার অধিকার সম্পর্কে আলোচনা করা…

সাইবার নিরাপত্তা আইন

ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংঘটিত সাইবার অপরাধ (Cyber Crime) দমন ও প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার বহুল বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ রদ করে সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ নামে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেন। সাইবার নিরাপত্তা আইনের সংজ্ঞানুসারে, “সাইবার নিরাপত্তা” অর্থ দ্বারা কোনো ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেম এর নিরাপত্তাকে বোঝানো হয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইন,…

বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে অপরাধ ও শাস্তি

বিস্ফোরক দ্রব্যাদি আইন, ১৯০৮ (The Explosive Substances Act, 1908) এ বিস্ফোরক দ্রব্য বা Explosive Substance বলতে বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ব্যবহৃত যে কোনো বস্তু, কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদিকে বোঝানো হয়েছে। এই আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বিস্ফোরণ ঘটানোর অভিপ্রায়ে অবৈধভাবে বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার করে যা জীবন বিপন্ন করতে পারে কিংবা জীবন বা সম্পত্তির গুরুতর…